ভোটে বাধা দিলে কঠোরভাবে দমন করা হবে: র্যাব মহাপরিচালক
ভোটদানে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হলে তা কঠোরভাবে দমন করা হবে বলে জানিয়েছেন র্যাবের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগের দিন শনিবার দুপুরে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন নির্বাচন কেন্দ্র পরিদর্শন এবং কেন্দ্রগুলোতে নেওয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
মিরপুর কলেজ মাঠে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, নির্বাচনে র্যাবের প্রায় ৭০০টি টহল দল ছাড়াও সাদা পোশাকের সদস্যরা সার্বিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন। তিনি জানান, নির্বাচনে তারা তিনটি পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করছেন। নির্বাচন পূর্ববর্তী পর্যায় শেষ হচ্ছে শনিবার। দ্বিতীয় পর্যায়ে রোববার ভোটের দিন ভোটকেন্দ্র ও কেন্দ্রসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; নিরাপদে ভোট দিয়ে মানুষ যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন সে ব্যবস্থা করা।
নির্বাচন পরবর্তী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখাকে তৃতীয় পর্যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক সময় বিজয়ী ও পরাজিত প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, সহিংসতা হয়। এসব বিষয় মাথায় রেখে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে র্যাব।
তিনি বলেন, ভোট দেওয়া গণতান্ত্রিক অধিকার। ভোটদানে ভোটারদের বাধা দেওয়া বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা বেআইনি। এ বেআইনি কাজ যারা করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে তাদের কঠোরভাবে দমন করা হবে।
খুরশীদ হোসেন বলেন, টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করতে সক্ষম হব। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য যে ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন এরই মধ্যে সেটা সম্পন্ন করেছি। আমি বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। দেখে মনে হয়েছে সব ঠিক আছে, সুন্দর পরিবেশ।
তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি সব শ্রেণি-পেশার মানুষ নির্বিঘ্নে যাতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে সেজন্য সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
টহল দল ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের গুজব প্রতিরোধে সাইবার পেট্রোলিংয়ের কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সুইপিং টিম কাজ করছে। থাকবে ডগ স্কোয়াড, বোম্ব স্কোয়াড। বিশেষ কোনো জরুরি প্রয়োজন হলে আমাদের হেলিকপ্টার স্ট্যান্ডবাই থাকবে।
বহিরাগতদের চিহ্নিত করতে ‘ওআইভিএস’ ব্যবহার করা হচ্ছে জানিয়ে র্যাবের মহাপরিচালক বলেন, এক এলাকার ভোটার অন্য এলাকার বহিরাগত হিসেবে গেলে তাদের শনাক্ত করতে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। এতে বহিরাগতরা ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।
র্যাবের মহাপরিচালক বলেন, আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে যে ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার তা গ্রহণ করা হয়েছে। আমি নিজে সাতটা বিভাগ পরিদর্শন করেছি। র্যাবের কর্মকর্তা ও সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের ব্রিফ করেছি। বিভাগীয় পর্যায়ের অন্য কর্মকর্তা যারা ছিলেন বিশেষ করে যারা নির্বাচন সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে মতবিনিময় করেছি।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে বিএনপি-জামায়াত ও কিছু দল নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে। মানুষের ব্যক্তিগত অধিকার রয়েছে কেউ নির্বাচনে ভোট দিতে পারে নাও পারে। কিন্তু কেউ যদি ভোট দিতে চায় আর তাকে যদি বাধা দেওয়া হয় বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয় তা হবে সম্পূর্ণ অসংবিধানিক ও বেআইনি। এ বেআইনি কাজ যারা করবে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছি তাদের কঠোরভাবে দমন করবো।
ভোটের এ সময়ে কিছু নাশকতা হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশেও গত নির্বাচনের পর ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে হামলা হয়েছে, ভারতেও নির্বাচনের সময় বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে সহিংসতা হয়, লোক মারাও যায়।
২০১৪ ও ২০১৮ সালের তুলনায় এবার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো দাবি করে র্যাবের মহাপরিচালক গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে সাংবাদিকদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।